মানুষ মাত্রই মরণশীল। প্রত্যেক মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সব আমল বন্ধ হয় যাবে। তবে এমন কিছু আমল রয়েছে যেগুলোর প্রতিদান বা সওয়াব মৃত ব্যক্তির আমলনামায় লেখা হতে থাকবে। তাই আমাদের এমন কিছু আমল করা প্রয়োজন, যা মৃত্যুর পরেও আমাদের সওয়াব পেতে সাহায্য করবে।
মৃত্যুর পর কবরে সওয়াব পাওয়ার আমলসমূহ হলো—
মানুষকে জ্ঞান শিক্ষা দেওয়া:
এমন জ্ঞান (ইলম) শিক্ষা দেওয়া যা মানুষের জন্য কল্যাণকর। যে জ্ঞান মানবজাতিকে হেদায়েতের পথে নিয়ে যায় ও মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়। পবিত্র কোরআন-হাদিস, নিত্য প্রয়োজনীয় মাসয়ালা শিক্ষার পাশাপাশি দুনিয়ার কল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান শিক্ষা দেয়াও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
সুসন্তান রেখে যাওয়া:
সুসন্তান বলতে লেখাপড়ায় শুধু ভালো তা নয়, যার ঈমান-আমল ঠিক আছে, যে শরিয়তের বিধান বর্তমান ফেতনার যুগেও সাধ্যমতো মেনে চলার চেষ্টা করে, তাকে বোঝায়। যারা পিতা-মাতা বেঁচে থাকতেও অনুগত ছিল, তাদের মৃত্যুর পরেও আল্লাহর কাছে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
মসজিদ নির্মাণ ও কোরআনে কারিম বিতরণ:
পবিত্র কোরআনে কারিমে মসজিদকে বলা হয়েছে হেদায়েতের কেন্দ্র। হাদিসে আছে, হজরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ তৈরি করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করবেন।’ –সহিহ মুসলিম
আর কোনো ব্যক্তি যদি মসজিদ বা মাদরাসায় পবিত্র কোরআন বিতরণ করে, ওয়াকফ করে এবং সেগুলো পড়ে তবে, তার সওয়াবের অংশ সে পাবে। -মুসনাদে বাজ্জার
বৃক্ষরোপণ করা:
হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যদি বৃক্ষরোপণ করে আর তা থেকে কোনো ফল ব্যক্তি বা হিংস্র প্রাণী খেলে তার জন্য সদকা, যদি কেউ চুরি করে খায় বা কোনো পাখিও খায় সেটিও তার জন্য সদকা। এমনকি যদি কেউ তা কেটে ফেলে সেটিও তার জন্য সদকা।’-সহিহ মুসলিম
মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা:
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে মানুষকে হেদায়েতের দিকে আহবান করবে এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সওয়াব তার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে। অথচ তাদের সওয়াব থেকে কোনো কমতি হবে না।’ –সহিহ মুসলিম
ওপরে বর্ণিত আমলগুলো ছাড়া মৃত্যুপরবর্তী জীবনে সওয়াব পাওয়ার মতো আরো কিছু আমল রয়েছে, যা আমরা মেনে চলতে পারি।
হজরত আবু উমামাতা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘মৃত্যুর পরও অনেক আমলের সওয়াব অব্যাহত থাকে। যেমন, ইসলামি রাষ্ট্রের সীমান্ত পাহারা দেওয়া ও পানির কূপ খনন করা।’ -মুসনাদ আহমাদ